«

»

মে 02

ম্যাকিনটোশ ও হ্যাকিনটোশ

iOS অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট কোর্সে সবাইকে স্বাগতম 🙂

[কোর্সের মূল পাতা | নিবন্ধনের লিঙ্ক]

এই কোর্সের প্রথম লেকচারে থেকে বেশ অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে আমার কাছে। সেগুলো নিয়ে চাইলে একটা “Frequently Asked Questions” সেকশন বানিয়ে ফেলা যায়। প্রশ্নগুলোর ভিতর কমন একটা ব্যাপার আছে। সেটা হল, এই কোর্সটির জন্য অ্যাপল এর কম্পিউটার দরকার, সেটা ছাড়া আমরা কোনভাবে আমাদের কাজ করতে পারব কিনা অর্থাৎ iOS অ্যাপ বানাতে পারব কিনা কিংবা এই কোর্সটা করতে পারবো কিনা। সেগুলো নিয়ে মূলত আমাদের আজকের আলোচনা। তবে প্রথমেই একটা কথা বলে রাখা ভালো, আপনাদের প্রশ্নগুলোর একেবারে সোজাসাপ্টা উত্তর দেয়া খুবই কঠিন ব্যাপার।

IntroIOS.017

 

প্রথমে আমার কাছে যে প্রশ্নগুলো এসেছে তার ভিতর থেকে যেগুলো এক কথায় উত্তর দেয়া সম্ভব এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলি।

  1. বাজার থেকে ৫০ টাকা দিয়ে Mac OSX এর ডিভিডি কিনে আমার উইন্ডোজ মেশিনে সেট আপ দিতে চাই। কি করবো ?
    • উত্তরঃ  এটা করতে পারবেন না, কারন Mac OSX এর অরিজিনাল ডিভিডি শুধুমাত্র অ্যাপল এর পিসিতে কাজ করবে। অন্য কোন মেশিনে কাজ করবে না। কাজেই এটা সম্ভব না।
  2. VMWare দিয়ে কি Mac OSX চালানো সম্ভব ?
    • উত্তরঃ একই সাথে সম্ভব ও সম্ভব না। এটা অনেকাংশে নির্ভর করবে আপনার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের উপর ও আপনি আপনার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সম্পর্কে কত ভালো ধারনা রাখেন সেটার উপর। বিস্তারিত পরে আসছি।
  3. VirtualBox দিয়ে কি Mac OSX চালানো সম্ভব ?
    • উত্তরঃ এটার সম্ভবের পক্ষে ভোট বেশি, আমিও পক্ষে ভোট দিলাম। তবে এটাও কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের উপর নির্ভর করবে। বিস্তারিত পরে আসছি।
  4. Hackintosh কি ? আমার পিসিকে কিভাবে Hackintosh বানাবো ?
    • উত্তরঃ হ্যাকিনটোশ হল Mac OSX বা ম্যাকিনটোশ অপারেটিং সিস্টেমকে হ্যাক করে বানানো একটা সিস্টেম যেটা আমাদের উইন্ডোজ মেশিনে চালানো যায় । হ্যাকিনটোশ বানানো একটা অনেক লম্বা প্রসেস, আমরা বিস্তারিত একটু পরে দেখব।
  5. এতক্ষণ যা বললেন, কোনটাই তো সহজ না। সবচেয়ে সহজ উপায় বলেন…
    • উত্তরঃ সবচেয়ে সহজ উপায় হল অ্যাপলের একটা কম্পিউটার কিনে ফেলা। অ্যাপল এর যতগুলো কম্পিউটার বাজারে পাওয়া যায় তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে ম্যাক মিনি পাওয়া যায়, এটার দাম ৬০-৬৫ হাজার থেকে শুরু। ম্যাকবুক প্রো বা ম্যাকবুক এয়ার সবগুলোর দামি মোটামুটি এক লাখের উপরে। এছাড়া সেকেন্ড হ্যান্ড কেনার চেষ্টা করা যেতে পারে, সেটা একটু দেখে নিতে পারলে ভালোই হওয়ার কথা। ক্রয়/বিক্রয়ের সাইটগুলোতে দেখতে পারেন।

এখন আমাদের মূল কথায় আসি। অ্যাপলের যেকোনো প্রডাক্টের জন্য আপনি যদি সফটওয়্যার ডেভেলপ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই Mac OSX অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে হবে। এইটা অ্যাপলের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম যেটা তাদের যেকোনো কম্পিউটারের সাথে প্রাইমারি অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে আসে। অর্থাৎ আপনি যদি একটা ম্যাকবুক প্রো কেনেন তবে এতে আপনি Mac OSX অপারেটিং সিস্টেম পাবেন। এখানে আসল কথা হল, অ্যাপল আপনাকে কোনকিছুই বিনামূল্যে দিবে না। তাদের বেশিরভাগ ভালো সফটওয়্যার অ্যাপস্টোর থেকে কিনতে হয় এবং সেগুলোর দাম আমাদের জন্য যথেষ্ট বেশি। এমনকি তাদের ডেভেলপার রিসোর্স যা কিছু আছে সেগুলোর বেশিরভাগই প্রিমিয়াম, অর্থাৎ আপনি iOS ডেভেলপার অ্যাকাউন্ট কিনলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ডেভেলপার রিসোর্স নিয়ে এত চিন্তার কিছু নেই, ইন্টারনেটে iOS কিংবা ম্যাক প্ল্যাটফর্ম কোনটারই রিসোর্সের কোন অভাব নেই।

এখন আমরা বেশিরভাগই যেহেতু উইন্ডোজ মেশিন ব্যবহার করি, আমাদের জন্য উপায় আছে দুইটা। একটা হল , VMWare অথবা VirtualBox দিয়ে ম্যাক ওএস এর ভার্চুয়াল মেশিন বানিয়ে তাতে কাজ করা , আর অন্য উপায়টা হল পিসিকে হ্যাকিনটোশ বানিয়ে ফেলা। এখানে আমরা দুইটা উপায় নিয়েই মোটামুটি আলোচনা করব। তবে কিছু কথা শুরুতেই বলে রাখি, অর্থাৎ ডিসক্লেমার দিয়ে রাখি 🙂

  • আমার আলোচনা করা কোন পদ্ধতি আপনার কম্পিউটারে ১০০% সঠিকভাবে কাজ করবে তার কোন গ্যারান্টি নেই। এমনকি একেবারেই কাজ না করার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। কাজ না করলে আমি দায়ী নই।
  • আপনার কম্পিউটারের কোন হার্ডওয়্যার নষ্ট হলে কিংবা কোন ক্ষতি হলে সেটার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার।
  • আর আমি এখানে কোন ওয়ান ক্লিক সল্যুশন দিতে পারব না। কারন, সেটা সম্ভব না। আমি কিছু ওয়েবসাইট আপনাদের দেখাব যেখানে গেলে আপনারা বিস্তারিত পদ্ধতি জানতে পারবেন। সেখান থেকে দেখে জেনে ও বুঝে ইন্সটল করতে হবে।

ভার্চুয়াল মেশিনে ম্যাক ওএস কিভাবে চালাবেন

ভার্চুয়াল মেশিনে ম্যাক ওএস ইন্সটল করা একটু অন্যরকম। আমরা সাধারণত উইন্ডোজ বা লিনাক্স এর ডিভিডি কিংবা ডিস্ক ইমেজ দিয়ে সরাসরি সেটআপ দিতে পারি, এখানে ঠিক সেইভাবে হবে না। আসলে হবে কিন্তু তার জন্য আমাদের কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও ভারচুয়ালাইজেশনের অনেক অ্যাডভান্সড বিষয় জানতে হবে। এত ঝামেলায় না গিয়ে আমরা একটা কাজ করতে পারি। আমাদের জন্য আগে থেকেই অনেক এক্সপার্ট লোকজন ভার্চুয়াল মেশিনের ইমেজ বানিয়ে রেখেছেন। তাদের বানানো কোন একটা ইমেজ আমরা VMWare অথবা VirtualBox এ মোটামুটি সহজে ইন্সটল করে ফেলতে পারি। নিচের লিঙ্কগুলোতে আপনারা এরকম কিছু  টিউটোরিয়াল পাবেন।

এছাড়াও আপনারা ইন্টারনেটে খুঁজলে আরও অনেক ইমেজ ও টিউটোরিয়াল পাবেন। যেটা ভালো মনে হয় ট্রাই করতে পারেন। তবে কয়েকটা ব্যাপার একটু খেয়াল রাখতে হবে। যেমন,

  • উপরের লিংকগুলো ভালমতো চেক করুন, কিভাবে ইন্সটল করবেন সেটা সবগুলো লিংকেই পাবেন। ইন্সটল করার নিয়মগুলো ভালমতো পড়ে বুঝে তারপর কাজ শুরু করুন।
  • ম্যাক ওএস কে আপনাকে কমপক্ষে ২ গিগাবাইট RAM দিতে হবে, ৪ গিগাবাইট দিতে পারলে ভালো, আরও বেশি পারলে আরও ভালো।
  • হার্ডডিস্কে এটার জন্য যথেষ্ট যায়গা দিতে হবে। ইমেজ ব্যবহার করলে সেগুলো সবই কনফিগার করা থাকার কথা। তবে যদি কম মনে হয়, যায়গা বাড়িয়ে নিন। ৩৫-৪০ জিবির মত রাখলে ভালো।
  • চেষ্টা করতে ম্যাক ওএস এর নতুন ভার্সন ইন্সটল করতে। বর্তমানে ম্যাক ওএসএক্স ম্যাভেরিক্স হল সবচেয়ে নতুন। এর আগে ছিল ম্যাক ওএসএক্স মাউন্টেন লায়ন। কাজেই চেষ্টা করতে হবে মাউন্টেন লায়ন এর চেয়ে পুরানোতে না যাওয়ার।

হ্যাকিনটোশ

আগে অ্যাপল তাদের কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার নিজেরাই বানাতো। তাদের পাওয়ার পিসিতে মূলত মটোরোলার পাওয়ার পিসি মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করা হত। কিন্তু এমনিতে সবসময়ই অ্যাপলের পিসি মানুষ কম ব্যবহার করে, তার উপর ইন্টেলের বানানো হাইস্পিড প্রসেসরগুলো বাজারে তুমুল জনপ্রিয়। কারন অন্য সকল কম্পিউটার নির্মাতা কোম্পানিগুলো সবাই ইন্টেলের প্রসেসর ব্যবহার করে। এ অবস্থায় অ্যাপলও ২০০৫ সালে ইন্টেলের প্রসেসর ব্যবহার করার ঘোষণা দেয় ও তাদের পরবর্তী কম্পিউটারগুলোতে তারা ইন্টেলের প্রসেসর ব্যবহার করতে শুরু করে। এরপর একটা মজার ব্যাপার ঘটে, ইন্টেলের প্রসেসরে যাওয়ার পর হ্যাকাররা সক্রিয় হয়ে উঠলো। আগের প্রসেসর সম্পর্কে কোন তথ্য বাইরের মানুষের কাছে ছিল না , কাজেই অ্যাপলের হার্ডওয়ার ছাড়া সেটা চালানোও অসম্ভব ছিল। কিন্তু ইন্টেলের প্রসেসর এর ব্যাপারে সকলেই কম বেশি জানে যেহেতু বাজারের সবাই কম্পিউটারে তাদের প্রসেসর ব্যবহার করছে। তখন হ্যাকাররা দেখল, আমরা যদি কোনভাবে ম্যাক ওএস কে দেখাতে পারি যে সে অ্যাপলের মেশিনেই চলছে তবে এখানে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম চালানো সম্ভব। এটার জন্য সারা পৃথিবীতে অনেকগুলো হ্যাকার প্রুপ কাজ শুরু করে ও এটা এখন একটা অনেকটাই সফল প্রজেক্ট।  এভাবেই একসময় হ্যাকাররা উইন্ডোজ মেশিনে ম্যাক ওএস চালাতে সক্ষম হল। এভাবেই “হ্যাক করা ম্যাকিনটোশ” – থেকে হ্যাকিনটোশ কথাটার উদ্ভব হয়ে গেল।

তো বুঝতেই পারছেন, ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম অ্যাপল সম্পূর্ণ নিজেদের হার্ডওয়্যারের জন্য বানিয়েছে। কাজেই আপনি চাইলেই সেটা অ্যাপল মেশিন ছাড়া আপনার অন্য মেশিনে ইন্সটল করতে পারবেন না। হ্যাকিনটোশ সেই অসম্ভবকে অনেকটাই সম্ভব করলেও এখানে একটা কথা থেকে যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, একটা ছোট শার্ট একটা মোটা মানুষকে হয়তো টেনেটুনে পরানো যেতে পারে, কিন্তু সেটা কখনোই তার গায়ে ফিট হবে না ও যাকে পরানো হল তিনি স্বস্তিবোধ করবেন না। এখানে কথাটা মোটামুটি মিলে যায়। আপনার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার যদি পুরোপুরি হ্যাকিনটোশ কম্প্যাটিবল হয় সেক্ষেত্রে আপনি মোটামুটি কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন, সেটা সবমিলিয়ে হয়তো ভালোই চলবে কিন্তু এক্সপেরিয়েন্স পুরোপুরি আসল ম্যাক মেশিনের মত হবেনা। তবে ১০০% কম্প্যাটিবল করা একটু কঠিন ব্যাপার, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা হবেনা। হয়তো আপনার কম্পিউটারের ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ জিনিস ঠিকমত কাজ করবে, বাকিটা করবেনা। হয়তো অপারেটিং সিস্টেম ঠিকমত কাজ করছে কিন্তু সাউন্ড কাজ করছেনা কিংবা গ্রাফিক্স খারাপ কিংবা ওয়াইফাই কাজ করছে না এমন হতে পারে।  তবে এখন এটা আগের চেয়ে ভালো ও সহজ হওয়ার কথা। হয়তো হার্ডওয়্যার কম্প্যাটিবিলিটি বেড়েছে আগের চেয়ে।

 

workbench

 

ইন্সটলেশন 

এখন আসি আমরা কিভাবে হ্যাকিনটোশ সেটআপ করবো সেই ব্যাপারে। আগেই বলেছি, এইটার কোন নির্দিষ্ট সোজাসাপ্টা পদ্ধতি নেই। যেহেতু অনেকগুলো হ্যাকার গ্রুপ কাজ করে , সুতরাং সকলেরই কোন না কোন ভিন্নতা আছে। তো আমি আপনাদের জন্য মোটামুটি কমন জিনিসগুলো সম্পর্কে কিছু ধারনা দিতে চেষ্টা করবো। বিস্তারিত আপনাদেরকে তাদের সাইট ও টিউটোরিয়াল দেখে শিখে নিতে হবে। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান তাদের ফোরাম ঘেটে খুঁজে বের করতে হবে, এখানে অন্য কেউ আপনাকে সাহায্য করতে পারবেনা।  হ্যাকিনটোশ নিয়ে সবচেয়ে ভালো ৪টা সাইট হল

  1. http://www.tonymacx86.com/
  2. http://iatkos.me/
  3. http://niresh12495.com/
  4. http://www.hackintosh.com/
  • প্রথমে আপনাকে জানতে হবে আপনার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার হ্যাকিনটোশ সাপোর্ট করবে কিনা। মূলত আপনার মাদারবোর্ড সাপোর্ট করবে কিনা, সেটা যদি করে তাহলে আপনি ভাগ্যবান, আপনি সামনে এগোতে পারবেন। আর যদি মাদারবোর্ড সাপোর্ট না করে তাহলে উপায় নেই, আপনি হ্যাকিনটোশ সেটআপ করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে আপনি উপরের পদ্ধতিতে ভার্চুয়াল মেশিনে চেষ্টা করতে পারেন। উপরের ৪টা সাইটেই হার্ডওয়্যার কম্পাবিলিটি সেকশন আছে , ওখানে খুঁজলে একটা উত্তর পেয়ে যাবেন। ল্যাপটপ যারা ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে HP Probook সিরিজ যারা ব্যবহার করেন তারা কিছুটা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন, এই সিরিজের কম্প্যাটিবিলিটি খুবই ভালো।
  • যদি আপনার পিসির হার্ডওয়্যার হ্যাকিনটোশ সাপোর্ট করে তাহলে এখন আপনি কাজ শুরু করতে পারেন। ৪টা সাইটেই তাদের নিজস্ব ইন্সটলেশন পদ্ধতি আছে। এদের মধ্যে আমার কাছে তুলনামূলক সহজ মনে হয় iATKOS এর সিস্টেমটা। ওরা একবারে কমপ্লিট সেটআপ ডিস্ক ইমেজ দেয়। এটা আপনারা ওদের ফোরামে বিস্তারিত পাবেন। নতুন OSX Meverics টা ওরা এবার প্রিমিয়াম করে রেখেছে। কাজেই আপনারা ওএসএক্স মাউন্টেন লায়ন কিংবা লায়ন এর সেটআপ ডিস্ক ইমেজ ডাউনলোড করে নিন, এটা ফ্রিতে পাবেন। তবে এখানে সমস্যা হল, ম্যাকে ডিস্ক ইমেজের ফাইল ফরম্যাট ভিন্ন। এখানে এটার ফাইল এক্সটেনশন .dmg , এটা উইন্ডোজ বা লিনাক্স পড়তে পারে না। সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ উপায় হল, আশেপাশে বন্ধুবান্ধব কারো ম্যাক থাকলে তার কাছ থেকে ডিভিডিতে ইমেজ ফাইলটা রাইট করে নিন।    উইন্ডোজে Transmac নামে একটা সফটওয়্যার পাবেন খুঁজলে, এটা dmg ফাইল পড়তে পারে, এটা দিয়ে একটা ডিভিডিতে ইমেজ ফাইলটা রাইট করে নিতে পারবেন । সফলভাবে শেষ হলে আশা করা যায়, আপনার ম্যাক সেটআপ ডিস্ক রেডি। TonymacX86 এর সিস্টেমটা একটু অন্যরকম, তাদের একটা ইউএসবি ড্রাইভ বুটেবল করার প্যাকেজ আছে, এটা দিয়ে প্রথমে আপনার পেনড্রাইভ বুটেবল করে নিয়ে তারপর ম্যাকের অরিজিনাল ডিস্ক দিয়ে আপনার ইউএসবি ইন্সটলেশন ডিস্ক বানাতে হয়। এটা নিয়ে বিস্তারিত তাদের সাইটে পাবেন।
  • এখন আপনার হার্ডডিস্কে ম্যাকের জন্য একটা পার্টিশন তৈরি করুন। মনে রাখতে হবে, ডিস্কের শুরুতে মাস্টার বুট রেকর্ড রাখার জন্য একটা আলাদা পার্টিশন লাগবে, আপনি যদি ডুয়াল বা ট্রিপল বুট করতে চান যেখানে ম্যাক, উইন্ডোজ, লিনাক্স তিনটাই থাকবে সেক্ষেত্রে এই পার্টিশন অবশই লাগবে। ম্যাকের জন্য ড্রাইভে  কমপক্ষে ৫০ গিগাবাইট যায়গা রাখুন।
  • এখন যদি আপনার ইন্সটলেশন ডিস্ক তৈরি থাকে তাহলে এখন সবার আগে আপনার হার্ডডিস্কের পুরোপুরি ব্যাকআপ করে নিন। কোন প্রকার ডেটা লস হলে সেটার দায়দায়িত্ব আপনার, কাজেই কোন রিস্ক না নেয়াই ভালো। এরপর ইন্সটলেশন ডিস্ক ঢুকিয়ে পিসি রিস্টার্ট দিন এবং F12 চাপতে থাকুন। এখানে আপনার ডিস্কসহ সবগুলো হার্ডড্রাইভ পার্টিশন দেখাবে। এখান থেকে আপনার ডিস্ক সিলেক্ট করুন ও এন্টার চাপুন। সবকিছু ঠিক থাকলে সেট আপ শুরু হওয়ার কথা ও ভাষা পছন্দ করার একটা স্ক্রিন আসার কথা। যদি ইউএসবি দিয়ে ইন্সটল করেন সেক্ষেত্রে বায়োস থেকে ইউএসবি বুট এনাবল করে দিতে হবে। যদি এরকম না হয়, পিসি বারবার রিস্টার্ট নিতে থাকে কিংবা হ্যাং করে তাহলে আপনার কপাল একটু খারাপ। এক্ষেত্রে F12 চাপার পর একটা কমান্ড প্রমট এর মত আসে ওখানে -v , -x , cpus=1, cpus=2 এই ৪ টার বিভিন্ন কম্বিনেশন লিখে এন্টার চেপে চেষ্টা করুন। যেমন, প্রথমে -v লিখে এন্টার চাপুন , দেখুন কাজ করে কিনা, যদি না করে তাহলে -x দিয়ে আবার চেষ্টা করুন, এরপর -v  -x দিয়ে চেষ্টা করুন , এরপর অন্য কম্বিনেশনগুলো।  যদি কপাল ভালো হয়, সেটআপ শুরু হবে , আর না হলে আপাতত কিছু করার নেই। এটার জন্য যথেষ্ট সময়, ধৈর্য ও পড়াশোনা করতে হবে।
  • সেটআপ শুরু হয়ে গেলে এরপর আপনার সামনে ড্রাইভ সিলেকশন করার উইন্ডো আসবে। এখানে আপনাকে ম্যাকের জন্য যে ড্রাইভটা আগে বানিয়েছেন ওইটা সিলেক্ট করতে হবে। এখন, উপরে একটা মেনু পাবেন। এখান থেকে Disk Utility ওপেন করুন। এটা দিয়ে আপনার ম্যাকের ড্রাইভটাকে “HFS Journaling File System” এ ফরম্যাট করতে হবে। ফরম্যাট করা হয়ে গেলে এই ড্রাইভ সিলেক্ট করে নেক্সট এ চলে যান। এখানে সেটআপ কাস্টমাইজ করার একটা বাটন পাবেন। এখানে আপনি বিভিন্ন ড্রাইভারের একটা লিস্ট পাবেন, এখান থেকে যেগুলো আপনার পিসির হার্ডওয়্যারের জন্য শুধুমাত্র ওইগুলোতে টিক দিয়ে দিন ও সেটআপ শুরু করুন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এখন ডিস্ক থেকে ফাইল আপনার হার্ডড্রাইভে কপি হবে ও ইন্সটলেশন শেষের দিকে যাবে।
  • এভাবে যদি ইন্সটলেশন শেষ হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে রিবুট করতে বলবে। রিবুট করুন ও আগের মত F12 চাপতে থাকুন। এবারে আপনার হার্ডড্রাইভ পার্টিশনগুলোর ভিতর আপনার সদ্য ইন্সটল করা ম্যাক এর ড্রাইভ দেখবেন। ওটা সিলেক্ট করে ম্যাক ওএস এ বুট করুন। এখন যদি আর কোন ঝামেলা না হয় তাহলে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম চালু হবে।
  • ম্যাক যদি এখন আমাদের পিসিতে ইন্সটল হয়ে গিয়ে থাকে, এখন একটা ছোট্ট কাজ বাকি আছে। এই মুহূর্তে ম্যাক হার্ডড্রাইভ থেকে সরাসরি বুট করবে না। প্রতিবার আপনার ইন্সটলেশন ডিস্ক লাগবে। এটা থেকে মুক্তি পেতে Cameleon Bootloader নামে একটা বুটলোডার আছে , এটার লেটেস্ট ভার্সন ডাউনলোড করে সেটা আমাদের প্রথমে তৈরি করা মাস্টার বুট রেকর্ড এর পার্টিশনে ইন্সটল করতে হবে। এরপর আমরা ইন্সটলেশন ডিস্ক সরিয়ে নিতে পারব। ম্যাক সরাসরি হার্ডড্রাইভ থেকে বুট করবে।
  • এরপর আপনার পিসির হার্ডওয়্যার সবগুলো হয়তো ঠিকমত কাজ করবেনা। এজন্য TonymacX86 সাইটে Multibeast নামে একটা ড্রাইভার প্যাকেজ আছে। এটা ইন্সটল করতে পারেন , তবে অবশই মনে রাখতে হবে , সেই ড্রাইভারগুলোই ইন্সটল করতে হবে যেগুলো আপনার হার্ডওয়্যার এর জন্য। তা না হলে কার্নেল প্যানিক হবে ও পরেরবার কম্পিউটার চালু নাও হতে পারে। কাজেই যা করবেন বুঝে শুনে সাবধানে করতে হবে।

কাজেই বুঝতেই পারছেন, কাজটা খুব একটা সহজ নয়। যেহেতু, এখানে আমাদের কাজটা হচ্ছে যেটা যার করার কথা না , তাকে দিয়ে সেটা জোর করে করানো। কাজেই কিছু কাঠখড় পোড়ানো কিংবা অনেক প্রকারের ঝামেলা সহ্য করার ঝামেলায় যেতেই হবে। তবে একটা কথা বলতে পারি, আপনার যথেষ্ট ধৈর্য্য থাকলে ও ধৈর্য্য ধরে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারলে এখান থেকে আপনি ম্যাক ও ইউনিক্স সিস্টেমের অনেক কিছু শিখবেন। আর কোন কিছু শেখাই বৃথা নয়, কোন না কোন সময় সেটা কাজে আসে।

সবশেষে একটা মজার কথা বলে শেষ করি। হ্যাকিনটোশের কোন একটা ফোরামে একদিন দেখলাম একজন প্রশ্ন করেছে…

প্রশ্ন ঃ  Which is the best Laptop that is 100% Hackintosh compatible ?

সেটার উত্তরে একজন এক্সপার্ট ঃ  Of Course , there is one, Dude. Apple makes it 😀 

 

আজ এ পর্যন্তই। সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ…… 🙂

Comments

comments

About the author

Ashiq Uz Zoha

আমি আশিক-উজ-জোহা (অয়ন)। বুয়েট কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ২০১৩ সালে আমি গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করি। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শুরু করি। এরপর পড়াশোনা শেষ করে বুয়েটেরই দুই বন্ধু মিলে ধ্রুবক ইনফোটেক সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একটি স্টার্টআপ সফটওয়্যার কোম্পানি শুরু করি, এখানে আমরা মূলত স্মার্টফোন বেইজড ইনফরমেশন সিস্টেম, অ্যাপস ও গেমস ডেভেলপ করি। এছাড়া বুয়েটে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও  সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কন্টেস্ট এর সাথে জড়িত আছি। বর্তমানে ধ্রুবক ইনফোটেক সার্ভিসেস লিমিটেড এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত আছি ।

Leave a Reply