ফটোগ্রাফী

কোর্সের নাম: ফটোগ্রাফী

 

রেজিস্ট্রেশনের লিংকএখানে ক্লিক করে কোর্সে রেজিস্ট্রেশন করে নিন। এই কোর্সটি সম্পূর্ণ বিনা মূল্যের।

প্রথম লেকচারের লিংক:- ফটোগ্রাফী: ভূমিকা

দ্বিতীয় লেকচারের লিংক:- ফটোগ্রাফী: ক্যামেরা

তৃতীয় লেকচারের লিংক:-ফটোগ্রাফী: লেন্স

চতুর্থ লেকচারের লিংক:ফটোগ্রাফী: এক্সপোজার

পঞ্চম লেকচারের লিংক: ফটোগ্রাফী কম্পোজিশন – ১ 

ষষ্ঠ লেকচারের লিংক –ফটোগ্রাফী: কম্পোজিশন এবং মুহুর্ত – ২

সপ্তম লেকচারের লিংক –ফটোগ্রাফী: পর্যবেক্ষন এবং চিন্তার প্রয়োগ

অষ্টম লেকচারের লিংক –ফটোগ্রাফী: ছবি দিয়ে গল্প বলা

প্রশিক্ষক: মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান

 

যোগাযোগ: monir.micro@gmail.com
The joy of childhood
কোর্স পরিচিতি:

 

মুখে অল্প অল্প হাসি চলে আসছে এই কোর্স এর সম্পর্কে লিখতে গিয়ে। ফটোগ্রাফী নিয়ে সারা বিশ্ব এখন মাতাল, সবার হাতে হাতে ক্যামেরা। স্মার্টফোনে তো সামনে একটা, পেছনে একটা! এই দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে আমাদের সবার হাতেই কিন্তু যন্ত্রখানি পৌঁছে গেছে। আর কোন শিল্পমাধ্যমে মনে হয় প্রযুক্তি এতখানি বিপ্লব আনতে পারেনি, যতটা পেরেছে ফটোগ্রাফীর ক্ষেত্রে। ক্যামেরার এত সহজলভ্যতার পর অনেকেই ভেবেছিলেন (এখনও ভাবেন) ‘এক্সপার্ট’ ফটোগ্রাফারদের দিন বোধহয় শেষ, এই মাধ্যমে প্রফেশনালদেরও প্রয়োজনও আস্তে আস্তে ফুরাবে। কিন্তু ধারনাটা বোধ হয় ভুল। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে, ফটোগ্রাফারদের প্রয়োজন কমেনি, বরং আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এক ফেসবুকেই দেখুন কতজন প্রফেশনাল ওয়েডিং ফটোগ্রাফার এর ফ্যান পেজ, এরা সবাই কিন্তু মোটামুটি নিজেদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ফটোজার্নালিস্ট এবং ফাইন আর্ট ফটোগ্রাফারদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কিন্তু কেন? আমার ধারনা এ্রর একটা বড় কারন দৃ্ষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ফটোগ্রাফীর অবাধ বিস্তার। মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ছবি দেখতে চায়।

 

একটা উদাহরন দেই। ধরুন আপনার বন্ধুর বিয়েতে (কেন জানি বার বার ওয়েডিং ফটোগ্রাফীর উদাহরণ টানছি) তার ছোটভাই ডিএসএলআর দিয়ে অনেকগুলো ছবি তুললো, কোন পারিশ্রমিক নিলনা। এই ছবিগুলো যখন আপনি একজন প্রফেশনালের অনলাইন পোর্টফোলিওর  সাথে তুলনা করবেন, তখন দেখবেন আকাশ পাতাল তফাত। কম্পোজিশান, আলো, শার্পনেস…সবকিছুতে। ঠিক তখনই কিন্তু উপলব্ধি করবেন যে নিজের বিয়েতে একজন প্রফেশনালকেই আনতে হবে!

Image-5

 

আর একটা উদাহরন। ফার্মগেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। পত্রিকাগুলো নিউজের জন্যে ছবি খুঁজছে। তারা হয়তো ফেসবুকে একটা ঘোষনা দিয়ে দিল যার যার কাছে ছবি আছে সাবমিট করার জন্য। অনেকেই তাদের সেলফোন দিয়ে ছবি তুলে রেখেছিল, সেগুলো সাবমিট করলো। দেখা গেলো সব ছবিই দুর থেকে তোলা শুধুই আগুনের ছবি…স্থান কাল এবং হতাহত সম্পর্কে কোন ধারনা পাওয়া যায়না ছবিগুলো দেখে। বাধ্য হয়ে তারা একজন প্রফেশনাল ফটোজার্নালিস্টের (ধরুন আবির আবদুল্লাহ ভাই, এ্যালেক্সিয়াতে ওনার পোর্টফোলিও দেখুন “এখানে (লিংক)”) শরনাপন্ন হল। কেননা শেষ পর্যন্ত তারা বুঝতে পেরেছে যে ঠিক সময়ে ঠিক যায়গায় উপস্থিত খেকে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে সঠিক ছবিটি একজন ফটোজার্নালিস্টই তুলে আনবেন।

 

Images-8উদাহরনগুলো দেয়ার কারণ একটাই। আপনাদের আশ্বস্ত করা যে ‘ভাল’ ফটোগ্রাফারের প্রয়োজন আসলে কমেনি, বরং বেড়েছে এবং নিকট ভবিষ্যতেও বাড়বে যদি না অন্য কোন শিল্পমাধ্যম ফটোগ্রাফীকেই রিপ্লেস করে ফেলে। আগে অনেক কম ফটোগ্রাফার ছিলেন, কাজেই ফোকাসটা তাদের দিকে বেশি ছিল। ফটোগ্রাফী শুরু করাটাই ছিল চ্যালেঞ্জের ব্যপার…ফিল্ম, ক্যামেরা, কেমিক্যালস, ডার্করুম। খুব কম মানুষই শুরু করতেন, আর একবার শুরু করলে দৃষ্টি আকর্ষন করাটা একটু হলেও সহজ ছিল, কেননা প্রতিযোগীতা ছিলনা এখনকার মত (ব্যক্তিগত মতামত, ভিন্নমত কে শ্রদ্ধা)। কিন্তু এখন ব্যপারটা উল্টো। শুরুটা সহজ, একটা ক্যামেরা কিনে ফেলুন, বাসায় একটা কম্পিউটার। কিন্তু এরপর শুরু হবে পরিশ্রম। আপনার আশে পাশে অনেকেই ক্যামেরা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছে, আপনাকে তাদের সাথে প্রতিযোগীতায় নামতে হবে যদি প্রফেশনালি শুরু করতে চান। আর যদি নেহাতই শখের বশে শুরু করেন, তাহলে এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর হবেনা…সবার কাছ থেকে শিখবেন এবং শিখবেন খুব দ্রুত। মানুষের সাথে মেশার জন্যে ফটোগ্রাফীর মতো মজার মাধ্যম আর নেই। যদি শেখার সবগুলো ধাপ পার হতে পারেন, এবং লেগে থাকতে পারেন (যেটা সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ), তাহলে আপনার হবেই। নিজের উপর আস্থা রাখুন, নিজের ভাললাগার বিষয়গুলো খুজেঁ বের করুন। প্রকৃতি না পোকামাকড়? মানুষ নাকি বনজঙ্গল? পাহাড় নাকি সাগর? নাকি সবকিছুই? যেই বিষয়ের ছবি তুলতে ভাললাগে, সেই বিষয়ে ‘এক্সপার্ট’ হয়ে উঠুন। আপনাকে আর ঠেকায় কে?

 

কোর্সটি কেন এবং কাদের জন্যে:

 

এই কোর্সটি যারা ফটোগ্রাফী কেবল শুরু করেছেন বা শুরু করার প্ল্যান করছেন, মূলতঃ তাদের জন্যে। তবে কোর্সের অনেক বিষয়ই সবরকম স্কিল লেভেলের ফটোগ্রাফারদের কাজে লাগতে পারে।

 

ফটোগ্রাফীর বেসিকস খুব একটা কঠিন নয়। কিন্তু এই সহজ বিষয়গুলো শিখে রাখাটা খুবই জরুরী। অনেককেই আমি দেখেছি ক্যামেরা কেনার পর দু’ একমাস ছবি তোলেন…এর পর ‘ভাল হচ্ছেনা, আমার হবে না’ বলে হাল ছেড়ে দেন। আমার ধারনা এর মূল কারন এই বেসিকস এর অভাব। যেকোন শিল্পমাধ্যমেই যন্ত্র/রং/তুলি/ম্যাটেরিয়াল এর চেয়ে শিল্পী বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফটোগ্রাফীতে গুরুত্বপূর্ণ হল একটা বিষয় কে অন্যরকম ভাবে দেখার চোখ এবং সঠিক মুহূর্তকে ধরে ফেলার সতর্ক মানসিকতা। হ্যা, ক্যামেরার খুটিঁনাটি অবশ্যই জানতে হবে, কেননা ক্যামেরা এবং লেন্স দিয়ে আলো, জুম ইত্যাদি নিয়ন্ত্রন করেই তো আপনি আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে একটা ছবিতে ফুটিয়ে তুলবেন। এই মনের চোখ আর ক্যামেরার চোখের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনটাই শিখতে হবে। এটা হয়ে গেলে আপনাকে আর ভাবতে হবেনা, ছবি তুলতে থাকুন।

 

Image-7শুরুর লেকচারটায় থাকবে ফটোগ্রাফীর সাথে পরিচয়। সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, ফিল্ম এবং ডিজিটাল এর পার্থক্য নিয়ে কিছু কথা, আর বিভিন্ন রকম ফটোগ্রাফীর কথা..যেমন ধরুন ল্যান্ডস্কেপ, লাইফস্টাইল অথবা সংবাদমাধ্যমের জন্যে ফটোগ্রাফী। যেহেতু এখন ডিজিটাল মাধ্যমটাই সবখানে চর্চিত ও স্বীকৃত, ফিল্ম ক্যামেরা বা প্রসেস নিয়ে আমি সামনে আর আলোচনা করব না। পরের লেকচারে থাকবে কিছু টেকনিক্যাল কথাবার্তা…ক্যামেরা এবং লেন্স এর রকমভেদ কেন হয়, কোন লেন্স কিভাবে আচরণ করে, ছোট পয়েন্ট এন্ড শুট এবং ডিএসএলআর এর মৌলিক পার্থক্য। এর পর আস্তে আস্তে আমরা ‘ফটোগ্রাফিক প্রসেস’ এর ভিতরে ঢুকবো। ছবির এক্সপোজার, কম্পোজিশান, মোমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে কথা হবে। শেষ দু’একটি লেকচারে আমার ইচ্ছা আছে ফটোগ্রাফীর ‘ফিলোসফি’ নিয়ে সামান্য আলোচনার। কিভাবে ফটোগ্রাফারের দৃষ্টিতে একটা বিষয়কে দেখতে হয়, ফটোজার্নালিজম এবং এথিকস….ইত্যাদি। শেষ লেকচারে কিছু টিপস থাকবে আপনার ক্যামেরা এবং আপনার ফটোগ্রাফার সত্ত্বা, সবকিছু নিয়েই।

 

লেকচারগুলো সাজানো হবে টেক্সট এবং ছবি দিয়ে। প্রচুর ছবির উদাহরন থাকবে যেন আপনারা সহজে ধারনাগুলো আত্মস্থ করতে পারেন। বেশিরভাগই হবে আমার নিজের তোলা, তবে যতটুকু সম্ভব অনুমতি নিয়ে অন্য ফটোগ্রাফারদের ছবিও ব্যবহার করবো। ভিডিও বা ভয়েস যোগ করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সময়ের অভাবে হয়ে উঠছেনা…

 

Imagesশেষ একটি কথা। ফটোগ্রাফীতে আমার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, যদিও ব্যক্তিগত পড়াশোনা ছিল এবং আছে। কাজেই অনেক ব্যপারে আমার মতামত গুলো ‘সাবজেকটিভ’ তথা একান্তই আমার নিজের মতামত বলে মনে হতে পারে আপনাদের কাছে। আশা করবো মুক্তমন নিয়েই বিষয়গুলিকে গ্রহণ করবেন। যদি কোন বিষয়ে দ্বিমত থাকে, অথবা কোর্সে কোন নিদৃষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা দেখতে চান, তাহলে কমেন্টে বা মেসেজে জানানোর অনুরোধ থাকলো।
পাঠ্যসূচী:

 

মূলতঃ এই পাঠ্যসূচীই অনুসরন করার চেষ্টা করা হবে। প্রথম লেকচার ছাড়া বাকিগুলোর ডিটেইলস কিছুদিন পর সংযু্ক্ত করে দেবো। আর ছাত্র-ছাত্রীদের চাহিদা বা ফিডব্যাকের উপর ভিত্তি করে কিছু বিষয় যোগ করারও ইচ্ছা আছে।
. ভূমিকা: (Introduction)

 

– ফটোগ্রাফীর (খুব) সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

– ফিল্ম এবং ডিজিটাল মাধ্যমের তূলনামূলক আলোচনা। (সংক্ষিপ্ত)

– সৃষ্টিশীলতা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ফটোগ্রাফী

– ফটোগ্রাফীর শ্রেণীবিভাগ (Genre)

– সাংবাদিকতায় ফটোগ্রাফী

– ফটোগ্রাফী শুরুর জন্যে কি কি প্রয়োজন (ক্যামেরা, লেন্স, সফটওয়্যার ইত্যাদি)

– কয়েকজন বিশ্বখ্যাত ফটোগ্রাফারের কাজ নিয়ে আলোচনা।

 

. ক্যামেরা এবং লেন্স (Camera and lens)

. কম্পোজিশন এবং মোমেন্ট (মুহূর্ত) – (Composition and moment – 1)

. কম্পোজিশন এবং মোমেন্ট (মুহূর্ত) – (Composition and moment – 2)

. আলো এবং এক্সপোজার (Light and exposure)

. দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তার প্রয়োগ (Observation and thought process)

. ফটোগ্রাফ দিয়ে গল্প বলা (Telling stories through photographs)

. টিপস, ট্রিকস (এবং যা কিছু আগে বলা হয়নি) (Tips and tricks)
আমি:

 

আমি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, পেশায় অণুজীববিজ্ঞানী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক, বর্তমানে অ্যামেরিকায় University of Tennessee, Knoxville এ পিএইচডি করছি একই বিষয়ে। বন্ধু বান্ধব, পরিবারপরিজন সবাই মনির নামে চেনে…বহু কষ্টে এখানে আমার অ্যামেরিকান প্রফেসর এবং বন্ধুবান্ধবের মাথায়ও এই নামটাই ঢুকিয়ে দিয়েছি, যেন বহুল পরিচিত  মোহাম্মদ নামে না ডাকে আমাকে। ফটোগ্রাফী শুরু করেছিলাম ২০০৬ এর শেষের দিকে, এর পরই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়লাম…সেই ভালবাসা এখনও অটুট। প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা না থাকলেও বেশ কিছু প্রদর্শণী ও প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করেছি, কিছু স্বীকৃতিও পেয়েছি।

 

ফ্লিকার এ শেয়ার করি আমার বেশিরভাগ ছবি, এই লিংক এ: www.flickr.com/bacillus

 

ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট এখানে: www.talkativepictures.com

 

* এই পোস্টে ব্যবহৃত সব ছবি কোর্স শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের হাতে তোলা। 

Comments

comments

Leave a Reply