«

»

আগস্ট 13

টেকনিকাল রিপোর্ট রাইটিং – লেকচার ১৬ – রিসার্চ প্রোপজাল বা স্টাডি প্লান বা রিসার্চ প্লান

[কোর্সের মূল পাতা | নিবন্ধনের লিংক]

রিসার্চ প্রোপজাল বা স্টাডি প্লান বা রিসার্চ প্লান

অনেক মাস্টার্স বা পিএইচডি তে আবেদনকারী শিক্ষার্থী এই বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। আমি কেবল তাদের কিছুটা ধারনা দেবার জন্যে চেষ্টা করলাম। মনে রাখবেন, এটার জন্যে বাঁধা-ধরা কোন নিয়ম নাই, তাই ভিন্নমত থাকা খুব স্বাভাবিক।
শিক্ষার্থীদের বলছি, কপি-পেস্ট প্রোপজাল থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। নিজের মতো করে নিজের প্রোপজাল বানিয়ে নিন।

 

রিসার্চ প্রোপজাল লেখার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রিসার্চ গ্যাপ খুঁজে বের করা। লিটারেচার রিভিউ করে প্রস্তাবিত বিষয়ের সর্বশেষ অবস্থা ব্যাখ্যা করার পরের কাজ হলো রিসার্চ গ্যাপটাকে হাইলাইট করা। এরপর যুক্তি-সঙ্গতভাবে এই শূন্যতাপূরণ করার ব্যাখ্যা দিতে হবে।

 

এই লেকচারে কেবলমাত্র ট্রেডিশনাল স্টাইলে একটা ফরম্যাট দেয়া হলো।

 

TITLE
এমন একটি শিরোনাম দিন যা আপনার রিসার্চ প্রোপজালকে এক বাক্যেই পরিচয় করিয়ে দিতে পারে।

 

PROJECT AIMS
আপনার রিসার্চের মূল উদ্দেশ্য এবং প্রত্যাশাকে (কি কি প্রশ্নের উত্তর পাবার আশা করেন) পয়েন্ট আকারে লিখে ফেলুন ।

 

PROJECT SIGNIFICANCE
ব্যাখ্যা করুন যুক্তি সহকারে কেন আপনার প্রোপজাল গুরুত্বপূর্ণ। গবেষনার জগতে আপনার প্রস্তাবিত গবেষনাটির প্রয়োজনীতা এবং অবদান; এমন কি নতুন কোন গবেষনার দ্বার উন্মোচিত হবে কি না তাও যোগ করুন।

 

BACKGROUND / DESCRIPTION OF PROJECT (রেফারেন্সসহ)
কিছু সাম্প্রতিক জার্নাল পেপার (রিভিউ পেপারগুলা বেশ উপকারে দেয়) পড়ে নিজের মতো করে সামারাইজ করুন আপনার প্রস্তাবিত গবেষনার সর্বশেষ (আপনার জানামতে) অবস্থা। বিষয়টাকে এমনভাবে সাজিয়ে লিখুন যাতে মনে হয় সর্বশেষ অবস্থাতে যে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাচ্ছেনা (কিন্তু খুব জরুরী) আপনার গবেষনা সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে বা উত্তর খোঁজাকে খুব সহজ করে দিবে। তার মানে, সমস্যাগুলাকে তুলে ধরুন এবং আপনার কাজটি সমস্যা সমাধানে যে বিশেষ অবদান রাখবে সেটাকে হাইলাইট করুন।খুব জরুরী মনে হলে ছবি যোগ করতে পারেন।  অবশ্যই রেফারেন্স দিতে ভুলবেন না। রেফারেন্সগুলো যেন মান-সম্পন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।  আপনার পূর্বের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা কিভাবে আপনাকে গবেষনাটি সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করাতে সাহায্য করবে তাও বলতে ভুলবেন না, কারন প্রস্তাব শুধু দিলেই হবেনা, ভালভাবে শেষ করার সামর্থ দেখানো দরকার।

 

PRELIMINARY STUDIES (যদি থাকে)
আপনি অলরেডি যদি কিছু কাজ করে থাকেন তা উল্লেখ করতে পারেন। এটা আপনার প্রস্তাবের পক্ষে একটা জোড়ালো সমর্থন দিবে।

 

 

PROPOSED APPROACH
এই অংশটা বাস্তবিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে এক্সপেরিমেন্টাল ডিজাইন বলা যেতে পারে। ধাপে ধাপে কিভাবে আপনি আপনার কাজটি শেষ করবেন তা লিখুন। কোন মেথডলজিতে, কি কি টেস্ট, ফিল্ড ওয়ার্ক (যদি দরকার হয়), এনালাইস, এমনকি যদি কোন অনুমতি প্রয়োজন হয় (বিশেষ করে প্রানিবিজ্ঞান সংক্রান্ত)। বিস্তারিত লিখুন।  মনে রাখবেন, আপনার কাজের জন্যে প্রয়োজনীয় ল্যাব ফ্যাসিলিটি আদৌ আছে কিনা, না থাকলে কিভাবে করবেন তাও ব্যাখ্যা করুন।

 

PROPOSED TIMETABLE
কর্মসূচীকে চার্ট আকারেও দিতে পারেন। সময়মত সব কাজ শেষ করার মতো করে তৈরী করুন।

 

POSSIBLE FUNDING OF PROJECT ACTIVITIES
এই ব্যাপারটা কোন কোন ক্ষেত্রে স্কিপ করা যেতে পারে।

পুরো প্রোপজালটি A4 সাইজের কাগজে ৫ – ৭ পাতার হতে পারে।

 

Comments

comments

About the author

বিলাস আহমেদ খাঁন

আমি খুব মাঝারি গোছের মানুষ। স্কুল-কলেজে কোনদিন ফার্স্ট হইনি, ফেলও করিনি। আমার মেধা কম, কিন্তু হতাশাবাদী নই। আমি বিশ্বাস করি, স্বপ্ন এবং চেষ্টা খুব কম মেধার মানুষকেও অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। আমি জানি, আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই আমার মতো যারা ক্লাসরুমে পেছনের বেঞ্চে বসেই স্বস্তি পায়, অধিকাংশ শিক্ষকই তাদের নাম মনে রাখতে পারেন না। কোন দরকারে শিক্ষকদের কাছে গেলে শুনতে হয় "তুমি আমাদের ছাত্র? কোনদিন তো দেখিনি!" আমি ওইসব শিক্ষার্থীদেরকে বলতে চাই "হতাশ হয়ো না। দুনিয়াতে খুব বেশি মানুষ প্রকৃতির উপহার নিয়ে মেধাবী হয় না। বেশির ভাগ মানুষই তোমার-আমার মতো। অল্প মেধা নিয়েও সততা, ধৈর্য্য, চেষ্টা আর স্বপ্ন দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়া যায়।"

পরিচিতিঃ আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত কলেজ অব টেক্সটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং (বর্তমানে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে বি এস সি করেছি, এরপর দক্ষিন কোরিয়ার ইনহা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিওসিনথেটিক্স নিয়ে গবেষণার চেষ্টা করেছি। ইনহা থেকে মাস্টার্স ও পি এইচ ডি-শেষ করেছি। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ডে বসে কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি।

Leave a Reply