«

»

জুন 01

ক্যান্সার ন্যানোটেকনোলজি, লেকচার- ৬

[কোর্সের মূল পাতা]

ভিমিও লিঙ্ক (ইউটিউবের বিকল্প) 

 

ন্যানোমেডিসিন কি?

ন্যানোমেডসিন যে কোন একটা সাধারন ঔষুধের ন্যানো রুপ ছাড়া আর কিছুই না। যেমনঃ Docetaxel, Doxorubicine, Paclitaxel বহুল ভাবে ব্যবহৃত কিছু ক্যান্সার প্রতিষেধক। এই ঔষুধ গুলোকেই যখন বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে “ন্যানো” রুপে রুপান্ত্রিত করা হয় তখন তাদেরকে ন্যানোমেডিসিন বলা হয়।

 

ন্যানোমেডিসিনের সম্ভাবনা কি কি?

ন্যানোমেডিসিনের সম্ভাবনা জানার আগে, আমাদের জানতে হবে বর্তমানের জেনারেল বা সাধারন চিকিৎসা ব্যাবস্থার সীমাবদ্ধতা কি কি? ক্যান্সারের বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা কি কি?

১) ঔষুধ সেবনের ফলে যে ফলাফল বা প্রভাব পাওয়া যায় তা চাহিদা বা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

২) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। চুল পড়া, মুখে ঘা, ওজন কমে যাওয়া সহ আরো অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

৩) সাধান ক্যান্সার প্রতিষেধকগুলোর কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য বা Target specificity থাকে না। যার ফলে ঔষুধের একটা অংশ সাধারন কোষে জমা হয় বাঁকি অংশ ক্যান্সার কোষে জমা হয়। ফলে অনেক কম ফলাফল পাওয়া যায়।

৪) ক্যান্সার প্রতিষেধক হিসেবে যে ঔষুধ ব্যাবহার হয় সেগুলো এমনিতেই কোষের (ক্যান্সার কোষ এবং ভালো বা সাধারন কোষ) জন্য টক্সিক (Toxic) বা বিষাক্ত। যে কারনে এই ঔষুধ গুলো ক্যান্সার কোষের পাশা পাশি অনেক ভালো কোষকেও মেরে ফেলে।

চিত্র ১. ন্যানোমেডিসিন সাধারণত সুস্থ কোষের মেমব্রেন ভেদ করে ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু ক্যান্সার কোষের ভিতরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রবেশ করতে পারে।

চিত্র ১. ন্যানোমেডিসিন সাধারণত সুস্থ কোষের মেমব্রেন ভেদ করে ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু ক্যান্সার কোষের ভিতরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রবেশ করতে পারে।

এই সীমাবদ্ধতা গুলোর সমাধান দিতে পারে ন্যানোমেডিসিন। ন্যানোমেডিসিন যেভাবে কাজ করেঃ

১) ক্যান্সার কোষ এবং সাধারন বা সুস্থ কোষের বাহ্যিক আবরণের মাঝে একটা পার্থক্য দেখা যায়। ক্যান্সার কোষের মেমব্রেন বা আবরণে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র (ন্যানোমিটার স্কেলে) দেখা যায়। ধারনা করা হয় ন্যানোমেডিসিন সেই ছিদ্র দিয়ে কোষের ভিতরে প্রবেশ করে, কিন্তু সুস্থ কোষের বাহ্যিক আবরণে কোন ছিদ্র না থাকায় সুস্থ কোষের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। যার ফলে সুস্থ কোষের কোন ক্ষতি হয় না। এবং সাধারণত শুধুমাত্র ক্যান্সার কোষেই ঔষুধের উপাদানগুলো জমা হয়।

২) কোন বিশেষ কোষ কে লক্ষ করে ন্যানোমেডিসিনের ডিজাইন করা যায়। যেমনঃ ব্রেস্ট ক্যান্সার (Breast cancer) কোষের কিছু কোষে HER-2 receptor থাকে। ন্যানোমেডিসিনের বাহ্যিক আবরণে যদি সেই HER-2 receptor কে লক্ষ করে Herceptin যুক্ত করে দেয়া যায় তাহলে সেই ন্যানোমেডিসিন শুধুমাত্র সেই নির্দিষ্ট কোষেই যাবে। ফলে অন্য কোন কোষের ক্ষতি হবে না এবং তুলনামূলক অনেক বেশি প্রভাব পাওয়া যাবে।

৩) ন্যানোমেডিসিনের সাথে কোন রং বা ইমেজিং এজেন্ট (Dye or imaging agents) যেমনঃ Cy5, Cy 5.5, quantum dots, SPIONs (iron oxide nanoparticles), Gold nanoparticles (AuNP) যুক্ত করে দেয়া যায় তাহলে রোগ প্রতিষেধকের পাশা পাশি রোগ নির্ণয়ও করা যাবে।

৪) ন্যানোমেডিসিন ব্যাবহারে ক্যান্সার চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেকাংশে কমে যাবে।

 

Comments

comments

About the author

মোঃ নুরুন্নবী

ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ থেকে ফার্মাসিতে অনার্স করে সেখানেই কিছুদিন শিক্ষকতা করি। কোরীয়ার “চুঞ্জু ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি” থেকে কেমিক্যাল আন্ড বায়োলজিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাস্টারস শেষ করে Chunbo Co., Ltd (www.chunbo.net) এ দু বছর গবেষক হিসেবে কাজ করি। এখন “কোরীয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ট্রান্সপোর্টেশন” এ ক্যান্সার ন্যানোটেকনোলজিতে পিএইচডি করছি। ২০১২ সালের শুরুর দিকে KB BioMed Inc. (Korea-Bangladesh Biomed Inc.) এর যাত্রা শুরু যারা শুরু থেকে প্রধান গবেষক হিসেবে দায়িতব পালন করছি।

Leave a Reply