«

»

মার্চ 23

টেকনিকাল রিপোর্ট রাইটিং – লেকচার ১৩ – প্রপোজাল রাইটিং (ইন্টারনাল) – পর্ব ১

প্রপোজাল রাইটিং


Lecture 13 from Shikkhok on Vimeo.

 

প্রপোজাল রাইটিং

প্রপোজালের লক্ষ্য হলো পাঠককে (যার কাছে লেখা হয়েছে) সমস্যা সমাধান বা প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্যে প্রস্তাবিত উপায়গুলোকে গ্রহন করানো। ইন্টারনাল প্রপোজালে দেখানো হয় যে, পরিস্থিতি খারাপ এবং আপনার প্রস্তাবিত পথই পারে অবস্থা উন্নয়ন করতে। এক্সটারনাল প্রপোজালে দেখানো হয় আপনার প্রস্তাবই সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য।

 

মূল ইস্যু

১. সমস্যা– কিভাবে কিছু ব্যাপার প্রত্যাশাপূরণ করতে পারছেনা এবং কারনগুলো কি। যেমন, মাত্রাতিরিক্ত অনুপস্থিতির জন্যে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং লাইনে প্রত্যাশিত উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং অনুপস্থিতির কারন হলো কর্মীদের ব্যাকপেইনজনিত অসুস্থতা।

২. সমাধান– কিভাবে সমস্যা দূর করা সম্ভব। যেমন, টেবিলের কনফিগারেশন বদল করা যাতে দীর্ঘ সময় কুঁজো হয়ে কাজ করা না লাগে এবং ম্যাটেরিয়াল স্থানান্তরে স্বয়ংক্রিয়তা সংযোজন।

৩. সমাধানের সুবিধাসমূহ– সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ কি ধরনের প্রত্যাশিত উপকার পাবেন।

৪. বাস্তবায়ন– কে, কিভাবে, কতদিনে প্রজেক্টটি বাস্তবায়ন করবে।

 

আস্থা তৈরী করা

আপনার সমাধানটি গ্রহন করার জন্যে আপনার পাঠকগণকে আপনার উপর আস্থা থাকতে হবে। আপনার মেথড স্পষ্ট এবং সাউন্ড হতে হবে যাকে বলা যাবে বিশষজ্ঞ অ্যাসেসমেন্ট। সমস্যা বিশ্লেষণ, কারন, সুবিধাসমূহ, বাস্তবায়নের সময়সীমা, খরচ ইত্যাদি যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা করতে হবে।

 

গাইডলাইন

১. টপ-ডাউন স্ট্যাটেজি ব্যাবহার করুন। (আগে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা বলুন)

২. সিচুয়েশন ব্যাখ্যা করুন। ভিজ্যুয়াল এইড ব্যাবহার করুন।

৩. ভূমিকাতে কনটেক্সট (context) দিন।

৪. সামারী দিন যা প্রস্তাবিত সমাধানকে স্পষ্ট করে।

 

প্রপোজাল ২ ধরনের হতে পারে

১. এক্সটারনাল প্রপোজাল একটি ফার্ম তৈরী করে অন্য কোন ফার্ম বা সরকার থেকে কোন সমস্যা সমাধানে অনুরোধ জানানো হলে যা ১০০ বা তারও বেশি পৃষ্ঠার হতে পারে আবার ৪/৫ পৃষ্ঠারও হতে পারে।

২. ইন্টারনাল প্রপোজাল প্রতিবেদক তৈরী করেন কোম্পানির ভিতরেই অন্য কারো উদ্দেশ্যে কোন আইডিয়া গ্রহন করার জন্যে কিংবা কোন ইক্যুইপমেন্ট কেনা বা গবেষণার অর্থ বরাদ্দের জন্যে।

আমরা ইন্টারনাল প্রপোজাল নিয়ে আলোচনা করবো।

 

চিন্তা করুন

১. অডিয়েন্স

  • অডিয়েন্স বিষয়টিতে কিভাবে জড়িত?

উদাহরণ ১. ধরা যাক, একটা অ্যাসেম্বলী লাইনে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রোডাকশন ম্যানেজার তার অধিনস্ত কাউকে দিলেন বিষয়টি ইনভেস্টিগেট করে উপযুক্ত সমাধান বের করতে। এক্ষেত্রে, প্রতিবেদককে সমস্যাটিকে এস্টেবলিশ করতে হবেনা, বরং উপযুক্ত সমাধানের দিকেই জোর দিতে হবে।

উদাহরন ২. একটি দোকানের ম্যানেজার দেখলেন যে, ফ্লোর অ্যারেঞ্জমেন্ট চেঞ্জ করলে বিক্রি বাড়বে। এক্ষেত্রে ম্যানেজার প্রথমে তার সুপারভাইজারকে কনভিন্স করবেন সমস্যাটির ব্যাপারে, তারপর সমাধান অফার করতে হবে।

  • অডিয়েন্স বিষয়টি সম্পর্কে কতটুকু জানেন?

আলোচ্য বিষয়টি সম্পর্কে অডিয়েন্সের জ্ঞানের গভীরতার উপরে নির্ভর করে বিস্তারিত বা সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।

  • অডিয়েন্সের কতটুকু অথরিটি আছে?

আপনি হয়তো একটা বাইক কিনে দেবার আবদার করলেন আম্মুর কাছে। আম্মু যদি আব্বুকে কনভিন্স করতে পারে, তবেই আপনার কপালে জুটতে পারে বাইক।

 

২. ভিজ্যুয়াল এইড

  • Gantt charts
  • Diagram

 

প্রপোজালটি অর্গানাইজ করুন

১. সমস্যাটি কি?

  • উপাত্ত
  • গুরুত্ব
  • কারন

২. সমাধান কি?

  • কিভাবে সমস্যাটি (নেতিবাচক কারনগুলো) দূর করবে।

৩. সমাধান কি বাস্তবায়নযোগ্য?

  • খরচ
  • কর্মীদের উপর প্রভাব
  • সময়

৪. সমাধানটি বাস্তবায়ন করা উচিত?

  • সুবিধাগুলো

 

ইন্টারনাল প্রপোজাল লিখুন  

(ব্লক ফরম্যাটে লিখুন)

১. ভূমিকা

  • পরিস্থিতি বা সমস্যাটি উপস্থাপন করুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ইনফরমেশন দিন; সাথে লিখুন কিভাবে আপনি সমাধান করবেন।
  • আপনার আইডিয়া বাস্তবায়ন করলে কি ধরনের বেনেফিট পাওয়া যাবে।
  • প্রস্তাবটি বাস্তবায়নের জন্যে কি ধরনের ব্যয় (টাকাপয়সাই শুধু নয়, শ্রম বা সময়সংক্রান্তও) দরকার।

২. বক্তব্য (বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করুন)

  • কিভাবে আইডিয়া বাস্তবায়িত হবে
  • ধাপগুলো আলাদা আলাদা করে বলুন
  • কোন মেথড ব্যাবহার করা হবে
  • কখন/কবে কাজ শুরু এবং শেষ হবে (টাইমপ্লান)
  • সকল ব্যয়-সংক্রান্ত বিষয় আলোচনা করুন

৩. উপসংহার/ রিকমেন্ডেশন

  • বেনেফিটগুলোতে জোর দিন।
  • রিডারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
  • আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে উপস্থাপন করুন।

 

পরের পর্বে একটি উদাহরণ দেয়া হবে।

 

Comments

comments

About the author

বিলাস আহমেদ খাঁন

আমি খুব মাঝারি গোছের মানুষ। স্কুল-কলেজে কোনদিন ফার্স্ট হইনি, ফেলও করিনি। আমার মেধা কম, কিন্তু হতাশাবাদী নই। আমি বিশ্বাস করি, স্বপ্ন এবং চেষ্টা খুব কম মেধার মানুষকেও অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। আমি জানি, আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই আমার মতো যারা ক্লাসরুমে পেছনের বেঞ্চে বসেই স্বস্তি পায়, অধিকাংশ শিক্ষকই তাদের নাম মনে রাখতে পারেন না। কোন দরকারে শিক্ষকদের কাছে গেলে শুনতে হয় "তুমি আমাদের ছাত্র? কোনদিন তো দেখিনি!" আমি ওইসব শিক্ষার্থীদেরকে বলতে চাই "হতাশ হয়ো না। দুনিয়াতে খুব বেশি মানুষ প্রকৃতির উপহার নিয়ে মেধাবী হয় না। বেশির ভাগ মানুষই তোমার-আমার মতো। অল্প মেধা নিয়েও সততা, ধৈর্য্য, চেষ্টা আর স্বপ্ন দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়া যায়।"

পরিচিতিঃ আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত কলেজ অব টেক্সটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং (বর্তমানে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে বি এস সি করেছি, এরপর দক্ষিন কোরিয়ার ইনহা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিওসিনথেটিক্স নিয়ে গবেষণার চেষ্টা করেছি। ইনহা থেকে মাস্টার্স ও পি এইচ ডি-শেষ করেছি। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ডে বসে কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি।

Leave a Reply